রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন গঠনতন্ত্র

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন গঠনতন্ত্র

১.  সংগঠনের নাম এবং উদ্দেশ্য

ক. নাম: সংগঠনের নাম হবে রাষ্ট্র  সংস্কার আন্দোলন (Rastro Songskar Andolon) । 

খ. উদ্দেশ্য: 

স্বাধীনতার ঘোষনাপত্রের অঙ্গীকার অনুযাযী বাংলাদেশকে একটি সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে, রাষ্ট্রের ক্ষমতা কাঠামো এবং অপরাপর সংস্কারের জন্য যত দ্রুত সম্ভব একটি রাজনৈতিক দল গড়ে তোলা।

দেশের প্রতিটি অঞ্চলে সংগঠনের ইউনিট ও নেতৃত্ব গড়ে তোলা এবং রাষ্ট্রের জনবিরোধী ক্ষমতা কাঠামো সংস্কারের আকাঙ্খা  জনমানুষের মাঝে জাগিয়ে তোলা।  

গণবিরোধী রাষ্ট্রকাঠামোকে উন্মোচন করে, আঘাত করে এই প্রকারের আন্দোলন গড়ে তোলা এবং চলমান গণআন্দোলন সমুহকে, পরিণতিতে পৌছাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা এবং এসব আন্দোলনকে মানবিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের বৃহত্তর ধারায় যুক্ত  রাখা। 

রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্দেশ্যে একটি জাতীয় সরকারের অধীনে সংবিধান (সংস্কার) সভার নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সকল রাজনৈতিক শক্তিকে  ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা। 


২. সাংগঠনিক কাঠামো  

ক.  সমন্বয় কমিটি: রাষ্ট্রসংষ্কার আন্দোলনের প্রথম সাধারণ সভায় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। এই সমন্বয় কমিটিকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্যে সংগঠনের সব কাজকে সমন্বয় করার দায়িত্ব দেয়া হয়। 

খ.  নির্বাহী কমিটি: সমন্বয় কমিটি তাদের প্রথম সভায় তাদের সদস্যদের ভোটে সাত সদস্যের নির্বাহী কমিটি নির্বাচন করবে। নির্বাহী কমিটি এবং সমন্বয় কমিটির সদস্যরা সংগঠনের যে কোনো সদস্যের কাছে তাদের দায়িত্বের বিষয়ে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। রাজনৈতিক দল গঠনের কাউন্সিল পর্যন্ত সমন্বয় কমিটি  এবং নির্বাহী কমিটি তার দায়িত্ব পালন করবে।    

খ.  ইউনিট: রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ইউনিট। ইউনিট যে কোনো  সংসদীয় আসন, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, মহানগর বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ভিত্তি করে গড়ে  তোলা যাবে । ইউনিট  সৃষ্টির জন্য কম পক্ষে পাঁচ জন সদস্য থাকতে হবে। নতুন ইউনিটের প্রথম সাধারণ সভায় উদ্যোক্তা সদস্যরা, ইউনিটের পাঁচ সদস্যের সমন্বয় কমিটি নির্বাচন করবেন।  ইউনিট ঘোষণার আগ পর্যন্ত নির্বাহী কমিটির আমন্ত্রণে একটি প্রস্তুতি কমিটির মাধ্যমে সংগঠিত হওয়া যাবে।  

গ.  সদস্য: সদস্য, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের একক।  সদস্যরা কোনো না কোনো ইউনিটের সাথে যুক্ত থাকবে। 

৩. সমন্বয় কমিটি

ক. সমন্বয় কমিটি রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ঘোষণা পত্র, কর্ম পরিকল্পনা এবং গঠনতন্ত্র প্রস্তুত, অনুমোদন ও প্রচার করবে।

 খ . সমন্বয় কমিটির  দায়িত্ব: 

১. রাষ্ট্র  সংস্কারের আন্দোলনকে  গণমানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া 

২. সংগঠন বিস্তারে নতুন ইউনিট গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখা 

৩. রাষ্ট্র সংস্কারের আন্দোলনে সামিল হবার জন্য অন্য সংগঠন এবং সংগঠকদের সাথে আলোচনা জারি রাখা 

৪. রাষ্ট্রের গণবিরোধী রূপ মানুষের কাছে তুলে ধরা 

৫. রাষ্ট্রের চলমান সংকটে দৃঢ় অবস্থান নেয়া এবং গণমানুষকে সংঘবদ্ধ করা 

৬.  রাষ্ট্র সংস্কারের ক্ষেত্রগুলিকে পরিষ্কার করা 

৭. রাষ্ট্র সংস্কারের পথ ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে  স্পষ্ট ধারনা গড়ে তোলা । 

৮. ইউনিটের এবং তার নেতৃত্বের  সম্মতি অনুমোদন দেয়া 

৯. সংগঠনের সব পর্যায়ের সংগঠনিক দ্বন্ধ ও অভিযোগ নিরসন করা 

১০. সর্বোচ্চ দ্রুততায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনকে একটি রাজনৈতিক দল হিসাবে গড়ে তোলা। 

১১. সদস্যদেরকে কাজের পরিকল্পনা আর অগ্রগতি বিষয়ে অবহিত রাখা 

১২. সংগঠনের সকল সদস্যদের নিয়ে সাধারণ সভার আয়োজন করা 

১৩. ঘোষণা পত্র, কর্ম পরিকল্পনা এবং গঠনতন্ত্র পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়লে সদস্যদের সাধারণ সভায় তা পাশ করিয়ে নেয়া। 

৪. নির্বাহী কমিটি

 ক. নির্বাচন: সমন্বয় কমিটির প্রথম সাধারণ সভায় সমন্বয় কমিটির উপস্থিত সদস্যরা সাত  সদস্যের  নির্বাহী কমিটি নির্বাচিত করবেন । নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরুতে নির্বাচন পরিচালনার জন্য সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একজনকে নির্বাচন কমিশনার হিসাবে প্রস্তাব এবং গ্রহণ করা হবে। নির্বাহী কমিটির প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে সদস্যদের নাম প্রস্তাব করা হবে।  প্রার্থীর নাম যদি অন্য কেউ প্রস্তাব করে তবে প্রার্থী তার অসম্মতি জানাতে পারবে। প্রতিটি প্রস্তাবিত নামের পক্ষে প্রস্তাবকারী এবং প্রার্থী বাদে ন্যূনতম একজনকে সমর্থন দিতে হবে। যে কোনো সদস্য কোনো প্রার্থীর ব্যাপারে আপত্তি তুলতে পারবেন। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনার আপত্তির কারণ এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্য শুনবেন এবং প্রার্থিতার যোগ্যতার ব্যাপারে একক ভাবে সিদ্ধান্ত নিবেন। প্রস্তাব পর্ব শেষ হলে নির্বাচন কমিশনার প্রার্থীর তালিকা সবার সামনে পড়ে শোনাবেন।

ভোট গ্রহণের জন্য ইন্টারনেট ভিত্তিক এপ্লিকেশন ব্যবহার করা হবে। উপস্থিত সকল সদস্যই ফোন বা কম্পেউটারের মাধ্যমে  ভোট দিতে পারবেন।  ভোটাররা সর্বোচ্চ সাতজন প্রার্থীর জন্যে ভোট দিতে পারবেন। সতের বেশি প্রার্থীকে ভোট দিলে সেই সদস্যকে তার ভোট সংশোধনের সুযোগ দেয়া হবে।  ভোট দেয়া শেষ হলে নির্বাচন কমিশনার প্রথমে ভোটের এপ্লিকেশনে, সকল ভোটের বৈধতা বিচার করে নেবেন। উনি সন্তুষ্ট থাকলে সকলের কাছে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করবেন। 

ক. নির্বাহী কমিটির পদ ও দায়িত্ব বন্টন: নির্বাচিত নির্বাহী কমিটির প্রথম সভায় কমিটির সদস্যরা নির্বাহী কমিটির প্রধান সমন্বয়ক  নির্বাচন করবেন।  সমন্বয়ক  রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের সকল কাজের সমন্বয়ের সাথে সাথে সংগঠনের মুখপাত্র হিসাবেও দায়িত্ব পালন করবেন। সংগঠনের পক্ষে উনি অন্য সংগঠনের সাথে সম্পর্ক গড়তে পারবেন। নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সাথে তার সকল কাজে বিষয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখবেন। সমন্বয়ক  নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মাঝে দপ্তর ভাগ করে দিবেন। নির্বাহী কমিটির দপ্তর হবে ছয়টি :

১. প্রধান সমন্বয়ক: সংগঠনের সবার কাজের সমন্বয় করা ও নেতৃত্ব দেয়া। সংগঠনকে জনমানুষের কাছে প্রতিনিধিত্ব করা।  

২.  সাংগঠনিক সমন্বয়ক : সব ইউনিটের সাথে সংযোগ রক্ষা করা, ওয়ার্কশপ এবং টুর প্ল্যান করা  . 

৩. মিডিয়া সমন্বয়ক : ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট এবং  ইন্টারনেট এর যোগাযোগ সচল রাখা।    

৪. দপ্তর সমন্বয়ক : সংগঠনের অফিস, ইউনিট ও  সদস্য লিস্ট, প্রকাশনা, রিপোর্ট আর দলিল ব্যবস্থাপনা করা।  

৫. রাজনৈতিক সমন্বয়ক : সংগঠনের চিন্তা নির্মাণ আর কাজের অগ্রগতি হালনাগাদ রাখা। 

৬. কোষাধ্যক্ষ্য: চাঁদার বই ছাপানো এবং ইউনিটে পৌঁছানো,, চাঁদা  আদায় আর সংগঠনের অর্থনৈতিক রিপোর্ট তৈরী করা।   

৭. ন্যায়পাল: সংগঠনের যে কোনো সদস্যের অভিযোগ ফাইল করা এবং সকল পক্ষের বক্তব্য শুনে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগের বিচার করা। 

নির্বাহী কমিটি প্রতি সপ্তাহে মিলিত হয়ে কাজের পরিকল্পনা আর অগ্রগতি হালনাগাদ করবে। প্রয়োজনে তারা সমন্বয় কমিটির সদস্য বাড়াতে কমাতে পারবে। প্রতি মাসে সমন্বয় কমিটির সভাতে সংগঠনের এবং নির্বাহী কমিটির পরিকল্পনা আর কাজের রিপোর্ট পেশ করা হবে।  

৫. ইউনিট: 

ইউনিট রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কাজের মূল স্তম্ভ। ইউনিট স্বাধীন ভাবে রাষ্ট্র সংস্কারের রাজনীতি মানুষের কাছে তুলে ধরবে। ইউনিটের মূল দায়িত্ব হবে:  

১. সংগঠন বিস্তার: নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নতুন ইউনিট সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখা 

২. চিন্তা ও রাজনীতি  প্রচার 

৩. কর্মসূচি ভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তোলা

৪. সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে ওয়ার্কশপ করা এবং সংগঠনের রাজনীতি নির্মাণে ভূমিকা রাখা 

ইউনিট গঠন: ন্যূনতম পাঁচজন ব্যক্তি একসাথে হয়ে কোনো ইউনিটের জন্য জাতীয় সমন্বয় কমিটির সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।  জাতীয় সমন্বয় কমিটি আলোচনার ভিত্তিতে ইউনিট গঠনের সম্মতি জানাবে এবং সংগঠনের সকল ইউনিটের সদস্যদেরকে নতুন ইউনিট সম্পর্কে অবহিত করবে। 

ইউনিট তার সদস্যদের প্রথম সভায় পাঁচ সদস্যের নির্বাহী কমিটি নির্বাচন করবেন। ইউনিটের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় জাতীয় সমন্বয় কমিটির ন্যূনতম একজন সদস্য উপস্থিত থাকবেন, যিনি  নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন এবং জাতীয় সমন্বয় কমিটিকে রিপোর্ট করবেন।  

ইউনিটের নেতৃত্বে থাকবেন:

১. ইউনিট সমন্বয়ক    

২. প্রচার সমন্বয়ক  

৩. রাজনৈতিক সমন্বয়ক  

৪. দপ্তর সমন্বয়ক  

৫. কোষাধ্যক্ষ্য  

ইউনিটের দায়িত্ব হবে:

১. সংগঠন বিস্তার 

২. চিন্তা ও রাজনীতি  প্রচার 

৩. এলাকায় জাতীয় কমিটির প্রস্তাবিত কর্মসূচি ভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তোলা  

৪. সদস্যদের নিয়ে রাষ্ট্রসংস্কারের রাজনীতি নিয়ে ওয়ার্কশপ/ আলোচনা/ মতবিনিময়ের অয়োজন করা 

৫. সাংগঠনিক প্রস্তাবনার সার্বক্ষণিক পর্যালোচনা জারি রাখা 

৬. সদস্যদের নিয়ে সাপ্তাহিক বা পাক্ষিক সভা আয়োজন করা 

৭. জাতীয় সমন্বয় কমিটি এবং অন্য ইউনিটের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা আর কাজের সমন্বয় করা। 

৮. এলাকার নাগরিকদের নিয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের রাজনীতির বিষয়ে সভা সেমিনার করা 

৯. এলাকায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সংগঠনের রাজনৈতিক অবস্থান ঠিক করা এবং আন্দোলন গড়ে তোলা। 

৬. সদস্য নিয়মাবলী  

ক.  জনগণের পক্ষে রাজনৈতিক পরিবর্তনের আকাঙ্খা  ধারণকারী বাংলাদেশের নাগরিক রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য হবার উপযোগী বলে বিবেচিত হবেন। প্রতিটি সদস্যকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ঘোষণা পত্র, গঠনতন্ত্র এবং কর্মসূচি, এই তিনটি দলিল এর সাথে একাত্মতা পোষণ করতে হবে।    

খ. আগ্রহী ব্যক্তিকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কমপক্ষে দুইজন সদস্যের সুপারিশে, সদস্য চাঁদা সহ সদস্যপদের আবেদন ফর্ম পূরণ করে স্থানীয় ইউনিটে জমা দিতে হবে। ইউনিটের দপ্তর সমন্বয়ক  বা দায়িত্ব প্রাপ্ত সদস্য সংগঠনের সদস্য নিবন্ধন বই তে আবেদনকারীর তথ্য ফাইল করবেন এবং সদস্যের একটি নিবন্ধন নম্বর সৃষ্টি করবেন। নিবন্ধন নম্বর হবার সাথে সাথে আবেদনকারী ইউনিটের সদস্য বলে বিবেচিত হবেন।  

গ. সদস্যকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রাজনৈতিক চিন্তা ধারণ করে জনগণের কাতারে গিয়ে দাঁড়াবার মানসিকতা থাকতে হবে। 

ঘ.   অন্যান্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা পেশাজিবি সংগঠনের সদস্যরা রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য হতে পারবেন কিন্তু আবেদনের সময়কালে, অন্য রাজনৈতিক দলের সাথে সক্রিয় ভাবে যুক্ত কোনো সদস্য, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্য হতে পারবেন না।

ঙ . সদস্যদেরকে অবশ্যই রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচী বাস্তবায়নে বা জনমত গঠনের বা সংগঠন বিস্তারের মতো কোন না কোন কাজের সাথে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার মনোভাব  থাকতে হবে। 

চ. রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন তার কাজ চালিয়ে নেয়ার জন্য সদস্যদের মাসিক চাঁদার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। সেজন্যে সদস্যদের নিজ দায়িত্বে নিয়মিত মাসিক চাঁদা দিতে সচেষ্ট থাকতে হবে।  সংগঠনের প্রয়োজনে বিশেষ কর্মসূচির জন্য পরিচিতজনের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করার জন্যও তৈরী থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে যে এই কাজটা দেশের সবার প্রয়োজনীয় একটা কাজ, সেজন্যে সবার অংশগ্রহণ আমরা দাবি করতে পারি। 

সদস্যদের জন্য ন্যূনতম মাসিক চাঁদা ১০০ টাকা এবং ছাত্র ছাত্রী এবং শ্রমজীবী মানুষদের জন্য পঞ্চাশ টাকা। ন্যূনতম চাঁদা থাকলেও সদস্যরা চেষ্টা করবেন তার সামর্থ অনুযায়ী চাঁদা বাড়িয়ে দেয়া। ইউনিটের কোষাধ্যক্ষ্য, সদস্যকে চাঁদার রশিদ দিতে এবং প্রতি মাসে সংগঠনের এবং ইউনিটের আদায় ও খরচের হিসাব দিতে বাধ্য থাকবে। 

পর পর তিন মাস কোনো সদস্য চাঁদা দিতে অপারগ হলে কোষাধ্যক্ষ্য, সদস্য বরাবর নোটিশ প্রেরণ করবেন। সদস্য কোষাধ্যক্ষকে অপারগতার কারণ জনাবেনা এবং তার চাঁদা হালনাগাদ রাখবেন।  

ছ.   সদস্যরা যে কোনো সদস্যের সদস্যপদ বাতিলের আবেদন করতে পারবেন। সদস্যপদ বাতিলের আবেদনের ক্ষেত্রে নিচের কারণ গুলিকেই শুধু ধর্তব্যের মধ্যে নেয়া হবে :

১. রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক নির্দেশকে অমান্য করে চললে।  

২. রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোনো দুর্নীতি করলে।

৩. পর পর তিন বার কোষাধ্যক্ষের নোটিশের উত্তর না দিলে।  

৪. নৈতিক স্খলন জনিত ফৌজদারি অপরাধে দায়ী  হলে।  

৫. সদস্য ফর্মে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার তথ্য গোপন  করলে। 

৬. কোনো সদস্যের সাথে জোর জুলুমের চেষ্টা করলে।  

৭. কোনো সদস্যের গায়ে হাত তুললে।  

৮. কোনো সদস্যের সাথে যৌন হয়রানি করলে। 

জ .  সদস্যপদ বাতিল এর প্রক্রিয়া :

১. যে কোনো দুই জন সদস্য যৌথ ভাবে ন্যায়পালের কাছে “ছ” এ বর্ণিত যে কোনো  অভিযোগে, যে কোনো  সদস্যের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ তুলতে পারবেন।  

২. ন্যায়পাল বা তার নির্ধারিত কোনো  প্রতিনিধি  তদন্ত পরিচালনা করবেন।  দুই সপ্তাহের মধ্যে সদস্যদের উপস্থিতিতে একটি নিষ্পত্তি সভা ডাকবেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্বপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে  অভিযোগের নিষ্পত্তি করবেন এবং প্রয়োজনে অভিযুক্ত ব্যক্তির সদস্য পদ বাতিল করতে পারবেন।  

ঝ. সদস্যর অধিকার 

সংগঠনের সকল সদস্য নিচের অধিকার গুলো উপভোগ করবেন। যদি কোনো সদস্য তাঁর অধিকার পালনে বাধাপ্রাপ্ত  হন তবে তিনি ইউনিটের নেতৃত্বের কাছে এবং প্রয়োজন বোধে ন্যায়পালের কাছে প্রতিকার চাইতে পারবেন।  

 ১. সংগঠনের যে কোনো কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সমান অধিকার।

২. কিছু বলবার এবং সংগঠনের সভায় উপস্থিত থাকবার অধিকার। 

৩. সাংগঠনিক অভিযোগের  প্রতিকার পাবার অধিকার।  

৭. তহবিলঃ

১. সদস্য চাঁদা থেকে আয়। 

২. শুভান্যুধায়ী ব্যক্তিবর্গের অনুদান গ্রহণ করা হবে তবে তাঁকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কর্মসূচী সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে এবং এগুলো বাস্তবায়নে তাঁর সমর্থন থাকতে হবে।

৩. জার্নাল, পুস্তিকা, দলিলপত্র বিক্রি থেকে আয়। 

৪. প্রতি মাসিক সভায় তহবিল বিষয়ক প্রতিবেদন পেশ করা হবে। 

৫. জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য বা যে কোন সদস্য তহবিলের হিসাব দিতে বাধ্য থাকবে।      

                  

  ৮. প্রত্যাহার  প্রক্রিয়া 

সমন্বয় কমিটির সদস্য ও ইউনিট নেতৃত্বের  প্রত্যাহার প্রক্রিয়া 

১. সদস্যরা ইউনিট এবং জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্যদের প্রত্যাহার করতে পারবেন। নির্বাচনে দুর্নীতির অভিযোগ ছাড়া অন্য কোনো অভিযোগের জন্য নির্বাচনের ছয় মাস এর মধ্যে কোনো প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে না। প্রত্যাহার প্রক্রিয়া দুই ধাপে হবে প্রথম ধাপে প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে কি না সেটা নিয়ে সদস্যদের একটা অংশের দাবি আছে কি না সেটা দেখা হবে আর দ্বিতীয় ধাপে অভিযুক্তর প্রত্যাহারের ভোট হবে। যে কোনো এক মেয়াদে কোনো সদস্যের বিপক্ষে একবারই প্রত্যাহারের আবেদন করা যাবে।

২. অভিযোগ: নিচের অনিয়মগুলির জন্য প্রত্যাহার এর আবেদন করা যাবে।  

ক. সাংগঠনিক নির্দেশকে অমান্য করে চলা 

খ. তহবিল তসরূপের প্রমান পাওয়া

ঘ. জোর জুলুমের চেষ্টা করা 

ঙ. নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোনো দুর্নীতি করা 

চ. গায়ে হাত তোলা 

ছ. যৌন হয়রানি করা 

জ. নৈতিক স্খলন জনিত ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত  হওয়া  

৩. আবেদন: জাতীয় সমন্বয়কারী কমিটির সদস্য প্রত্যাহারের আবেদন করতে কমপক্ষে পঞ্চাশ ভাগ ইউনিট থেকে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সকল সদস্যের, ন্যূনতম বিশ ভাগ সদস্যের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর এবং স্বাক্ষর আবেদন পত্রের সাথে থাকতে হবে।  

ইউনিটের নেতৃত্বে থাকা কমিটির সদস্যের প্রত্যাহারের বেলায় ইউনিটের তিরিশ ভাগ বা পাঁচ জন এর মধ্যে যেটা বেশি সেই সংখ্যক সদস্যের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর এবং সই সহ প্রত্যাহার এর আবেদন করা যাবে। 

উভয় ক্ষেত্রে ন্যায়পাল বরাবর আবেদন করতে হবে। ন্যায়পাল নিজে যদি প্রত্যাহারের লক্ষ্য হয় তবে সমন্বয়ক বরাবর আবেদন করতে হবে।  

৪. জাতীয় সমন্বয়কারী কমিটির সদস্যের বিরুদ্ধে প্রত্যাহার এর আবেদন গৃহীত হলে ন্যায়পাল সভার স্থান এবং তারিখ জানিয়ে সকল ইউনিটকে একটি বিশেষ সভার আমন্ত্রণ করবেন। এই বিশেষ সভায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যে কোনো ইউনিটের সদস্য উপস্থিত থাকতে পারবেন।  রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ইউনিটের কম পক্ষে পঁচাত্তর ভাগ সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব এবং কম পক্ষে একশ জন সদস্যের উপস্থিতিতে কেবল এই সভা গ্রহণযোগ্য হবে।  

সভার শুরুতে উপস্থিত সদস্যদের লিস্ট থেকে ভোটার তালিকা নিশ্চিত করা হবে।  প্রত্যাহার সভায়, প্রত্যাহার এর পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হবে। তারপর প্রত্যাহার ভোটে যদি সভায় উপস্থিত সদস্যদের পঞ্চাশ ভাগ এর বেশি সদস্য প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার সপক্ষে রায়  দেন তবে অভিযুক্ত সমন্বয়কারী তার পদ থেকে অপসারিত বিবেচিত হবেন।       

৫. ইউনিটের বেলায় ন্যায়পাল বা তার প্রতিনিধি ইউনিটের সকল সদস্যদের একটি বিশেষ প্রত্যাহার সভার  ডাক দেবেন। সাধারণ সদস্যদের উপস্থিতিতে ন্যায়পাল বা তার প্রতিনিধি এই প্রত্যাহার সভা পরিচালনা করবেন। প্রত্যাহার সভায় প্রত্যাহার এর পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হবে। তারপর যদি সভায় উপস্থিত সদস্যদের পঞ্চাশ ভাগ এর বেশি সদস্য প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার সপক্ষে রায়  দেন তবে অভিযুক্ত সমন্বয়কারী তার পদ থেকে অপসারিত বিবেচিত হবেন।